patro

অবিবাহিত প্রাইমারি শিক্ষিকা

কনের বাপে, কহিল মোরে ,

“পাত্র খোঁজ, সরকারী চাকুরে।’

শুনিয়া কনে, হাসিয়া কহে,

“আরে একটু করুন অপেক্ষা!

পাত্রী চাই বিসিএস ক্যাডার,

আমি যে প্রাইমারি শিক্ষিকা।”

বিসিএস আর প্রাইমারি

করিয়া ফেলিল একাকার;

জাতির শিরদাঁড়া ভাঙ্গিয়া পরিছে,

নাহি যে কেহ দেখার।

দু’দিন পর আসিয়া কহিলাম,

“ভাই, পাত্র পাইয়াছি এইবার;

ভদ্র, শিক্ষিত, বেসরকারি চাকুরে,

দিনে নামাজ পড়ে নামাজ পড়ে পাঁচ বার।”

শুনিয়া সেদিন ভেংচিয়া মুখ,

কহিল কনের বাপ,

“মেয়ে যে আমার সরকারী চাকুরে,

করে দাও আমায় মাপ।”

সপ্তাহান্তে আসিলাম আবার

কনের বাপের দ্বারে;

ছাত্র ভাল, বংশ ভাল,

অভাব নাহি সংসারে।

বিসিএস প্রিলিতে টিকিল দু’বার,

লিখিত দিয়াছে খুব ভাল এবার।

এমন পাত্র হাতছাড়া ভাই,

করো না তুমি আর,

রাগিয়া কহিলেন কনের বাপ,

খেয়ে দেয়ে কাজ নাহি তোমার!

যোগ্য মেয়েকে দিব আমি,

যোগ্য ছেলের হাতে;

ঝামেলা করনা, এমনি করিয়া

প্রত্যাহ আমার সাথে।

অবশেষে পাইলাম খুজিয়া আমি ,

এক সরকারী চাকুরে;

বদ মেজাজি, রুক্ষ স্বভাবের

বলিলাম কনের বাপেরে।

“সরকারী চাকুরী করিলে ভাই,

মেজাজ থাকা স্বাভাবিক”;

কনের বাপে জবাব দিল,

হইয়া খুশি অধিক।

প্রস্তাব নিয়া গেলাম সেদিন,

সেই কাঙ্ক্ষিত পাত্রের ঘরে;

প্রাইমারি শিক্ষিকা শুনিয়া তাঁরা,

ফিরিয়া দিল মোরে।

কলেজ লেকচারার খুজিতেছে তাঁরা,

বহুদিন যাবত ধরিয়া;

প্রাইমারি টিচার চলিবে না তাদের,

দিল মোরে সাফ জানিয়া।

এমন করিয়া বয়স বাড়িয়া,

হইল ত্রিশ পার;

কনের বাপে কহিল মোরে,

সহা হয়না আর!

বিসিএস প্রিলিতে টিকিল যে ছেলে,

খবর কি এখন তাহার?

বিয়ে-শাদীর ব্যাপারে, খবর লয়ে,

দেখো তো একবার।

খবর লইলা শুনিলাম সে,

হইয়াছে বিসিএস ক্যাডার;

বিবাহ করিয়াছে বুনিয়াদি ঘরে,

বউ যে তার পুলিশ ক্যাডার।

কনের বাপে কহিল আবার,

“সন্ধান লও তো তুমি;

বেসরকারী চাকুরে ভদ্র ছেলেটার,

রাজী আছি এইবার আমি।”

“খবর লইয়া, অবাক হইয়া,

হাসিলাম অনেক বার;

কলেজ নিবন্ধনে টিকিয়া সে,

কলেজের লেকচারার।

বিবাহ করিয়াছে কিছুদিন হইল,

করিয়া বাছ-বিচার;

গরিব বাপের মেধাবী মেয়ে,

নহে কোন স্কুল টিচার।

-সংগৃহীত

Tags: No tags

One Response

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *